সাত কলেজ শিক্ষার্থীদের অবরোধ, বিশ্ববিদ্যালয় কমিশন গঠনের দাবিতে সায়েন্সল্যাবে তীব্র যানজট
- By Jamini Roy --
- 30 October, 2024
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) অধিভুক্ত সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে সেশনজট, শিক্ষার মান, এবং উন্নয়নমূলক নানা ইস্যুতে অভিযোগ জানিয়ে আসছেন। সেই দাবিগুলো আরো সংগঠিত করে সম্প্রতি তারা সায়েন্সল্যাব মোড়ে রাস্তা অবরোধ করে দাবি তুলেছেন সাত কলেজকে স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তরের জন্য কমিশন গঠনের।
আজ বুধবার (৩০ অক্টোবর) সকাল ১১টায় ঢাকা কলেজের শহীদ মিনার থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে সায়েন্সল্যাব মোড়ে এসে অবরোধ শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এতে এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর সড়ক, মোহাম্মদপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজিমপুর সড়কে সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। শিক্ষার্থীরা ‘শিক্ষা না বাণিজ্য, শিক্ষা, শিক্ষা’, ‘সিন্ডিকেট ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’, ‘কমিটি বাতিল কর, কমিশন গঠন কর’ প্রভৃতি স্লোগানে গলা মেলান। সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মুখপাত্ররা জানায়, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে তিনটি মূল দাবি উত্থাপন করা হয়েছে। এগুলো হলো:
১. অনতিবিলম্বে সাত কলেজকে নিয়ে একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করার জন্য একটি কমিশন গঠন। ২. কমিশন গঠন করে তার আওতায় ৩০ দিনের মধ্যে একটি বিস্তারিত রূপরেখা প্রণয়ন। ৩. বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের প্রক্রিয়া চলাকালে কোনো সেশনজট যেন না হয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় তার কার্যক্রম এমনভাবে পরিচালনা করবে যাতে সেশনজট থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধের কারণে এলিফ্যান্ট রোড, মিরপুর সড়ক, মোহাম্মদপুর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজিমপুর সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে।
গত ২১ অক্টোবর সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি জানিয়ে আন্দোলন শুরু করেন এবং সে সময় সরকার ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে একটি আল্টিমেটামও দেন। তবে তাদের অভিযোগ, এ বিষয়ে দ্রুত কোনো সাড়া না পাওয়ায় তারা বাধ্য হয়ে পুনরায় অবরোধ কর্মসূচি নিয়েছেন। এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের শিক্ষা উপদেষ্টা, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান, ও ঢাবি উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি জমা দিয়েছেন তারা।
সাত কলেজের মধ্যে ঢাকা কলেজ, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, কবি নজরুল সরকারি কলেজ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী কলেজ, মিরপুর বাঙলা কলেজ এবং সরকারি তিতুমীর কলেজের শিক্ষার্থীরা এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমন্বয়হীনতা, সংস্কার কমিটির কার্যক্রমে বিলম্ব এবং সেশনজটের কারণে এ ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। যদিও প্রশাসন এ বিষয়ে কোনো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ নেয়নি, তবে আন্দোলনের প্রেক্ষিতে এই দাবিগুলোতে দ্রুত সাড়া দেওয়ার জন্য তারা প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানান।
এর আগে, মঙ্গলবারও শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাব মোড়ে একই দাবিতে অবরোধ পালন করেন, যা প্রায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলতে থাকে। অবরোধ শেষে তারা পরদিনও একইভাবে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা জানান যে, যতক্ষণ পর্যন্ত তাদের দাবি মেনে কমিশন গঠনের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে না, ততক্ষণ পর্যন্ত তারা তাদের অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাবেন।